সোমবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৫

কনফেশান

ব্যার্থতার ইতিহাস লিখি আমি
বৃক্ক তোমার সইতে পারলো না
অন্ধকার লিখবার আগে আমার
আয়ুষ্কাল তুমি ধারণ কর পিতা


হে পাহাড় তুমি জেগে থাক অনন্ত
বাঘের বাচ্চাগুলো তোমার টোলে
বেত খাক্, শুশ্রষা পেয়ে বাড়ুক
বেঁচে উঠুক ডুবন্ত সব মৌল স্বপ্ন

ভূমি, প্রেমে যতো কম্পন উঠুক
বিশ্বাস যতই টাল খাক্ দোলকে
তোমার পদচ্ছাপে পা গলানোর
প্রয়াস থেকে যোজন দূরত্বে আমি

আর কখনো লিখবো না তোমায়
টাকার প্রয়োজন, দ্রুত পাঠিয়ে
প্রণাম নিও।

রবিবার, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৫

একটি বিশেষ ঘোষণা

বাবুদের চোখে ঢাঁই করা নানা ধরণের সিঁড়ি
একটি নামিয়ে এনে 
চল চেপে ধরি আকাশে 
ঈশ্বর নেমে এলে আজ পায়ে জুড়ে দেবো 
আইটেম সঙ্, ডিজে তোলরে ঝড় 
সব চিক্ মারা শরীর থেকে ঝরিয়ে দেবো 
নুন, দেখি কতদূর যেতে পারে প্ররোচক 

রাজপথ থেকে সমস্ত সতর্কী বার্তা নামিয়ে ফেলো
বিজ্ঞাপনে বিজ্ঞাপনে ভরে দাও ক্ষয়রাতির হা-মুখ, 
পুলিশ তুমিও সাপ্তাহিক ছুটি দাবি রাখো, 
মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল 
একটি দিন পাহারা দিক সমস্ত অস্ত্রাগার  থানা, 
ট্রাফিক তুমি তুলে নাও সমস্ত সিগন্যাল, দেখো 
ভিআইপি কিকরে কঁকিয়ে কঁকিয়ে পার হয় 
স্মার্ট সিটির পথ খিস্তির ভান্ড উগরে দিয়ে 

আমাদের নুন আর ভাতের চিন্তা কোনোদিনই ফুরোবে না
আমাদের স্বাস্হ্য, শিক্ষা, বাসস্হানের সুরাহা করতে হারিয়ে
ফেলেছে যারা যৌবন তাদের গাল বেয়ে নেমে 
আসছে আজ ইলিশে তেল আর আমাদের বুক চিরে
দেখা হচ্ছে দলীয় পতাকার রং কতটা উজ্জ্বল, 
তাদের পায়েও কষে বেঁধে দাও ঘুঙুর, ডিজে তোমার 
জাদু হাতে তোলরে ঝড়
আজ সব চিক্ মারা শরীর থেকে ঝরিয়ে দেবো নুন 

সংরক্ষিত বনাঞ্চল যতই প্ররোচিত করুক।

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৫

ওগো দু:খ জাগানিয়া

ঘুমিয়ে থাকলে সব শান্ততল্লাট জুড়ে 
সবাই জানে একথা। 
জানে নাঘুম ও জাগরণের মাঝে
চোখে কি করে ভিড়ে ভিড়ে থাকে
অগাধ অমলিন সব স্বপ্ন 

পাড়াতুতো এক নেতা ফাঁদ পেতে টুকে নেয়
ভুলভাল আর ফিরি করতে
বেড়িয়ে পরে পুরাতন পথ ধরে ধরে 
জানে নাতাকে দেয়া হয়েছে শুধু
সামান্য বহন ক্ষমতা 

একেবারে ঘুমিয়ে পরার আগে 
তোমায় চুমু খেতে চাই, 
একথা বুজিয়ে ফেলা দীঘির জলে
লিখে ভাসিয়ে দিলে আগরতলা শহর
কেঁপে কেঁপে ঢুকে পরে খাঁচায় খাঁচায়।

পাহাড়ের জলে অবিরাম কলকল অমল ধ্বনি
সমতলে লেপে থাকে সমূহ পতন ও কান্না।

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৫

চলো কাটাকুটি খেলি

আমি যা আমি তাই
তুমি যা তুমি তাই
মাঝে কেন উঁকি দেয়
মানবিক কান্না?

জীবিতরা কোথায় পেলো
এই অনুনাসিক স্বর?

আনবিক খাঁচায় কে রাঁধে
কে ছড়ায় গন্ধ
আমার মতো
তোমার মতো?

ছায়ার শরীর জানে
আলোর দূরত্ব।

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৫

অ-সুখ

পাহাড় ধরে রেখেছে বলে মুছে যায়নি, আমাদের সবুজ
পাহাড় ধরে রেখেছে বলে ভেঙে পরেনি, আমাদের আকাশ
নীচের গোপন কারসাজি, গোপন ফাঁদ, যতই দীর্ঘতা পাক।

তেষট্টি বছর শুধু ঋণ করে গেছে মূর্খ ও তার সভাসদরা
আর বাড়িয়ে তুলেছে অক্ষমতার গ্লানি। ওদের পালিশ মুখ,
বিপুল সঞ্চয়, চৌর্য্য প্রতিভা, যোজনার বরাদ্দে উজ্জ্বল।

কাকে তুমি বিশ্বাস করবে আর কাকে তুমি নেবে পাশে
বাজারে সব বিক্রি হতে বসে আছে ; গোটাকয়েক নচ্ছার
ছাড়া কে শোনে মাটির কান্না, আর অসুখী হয়?

পাহাড় ধরে রেখেছে বলে মুছে যায়নি, আমাদের সবুজ
পাহাড় ধরে রেখেছে বলে ভেঙে পরেনি, আমাদের আকাশ।

সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৫

মুখোমুখি

কিছু মানুষের মুখ জেনো লেপ্টে থাকা ঝড়
কিছু মানুষের কন্ঠ জেনো বিনা মেঘে বজ্র
কিছু মানুষের হাত জেনো কদমতলের বাঁশি
কিছু মানুষের পা জেনো জেগে থাকা উল্লাস

আমার কোনো কিছুতে নেই তেমন কোনো সঙ্কেত
আমার আয়না জুড়ে এক অচেনা পাখি, দিনরাত
গেয়ে যায়, চিরচেনা. রোপনের গান, অক্লান্ত!

আজ তাকে গালি দিলাম জবরদস্ত
আর তার চোখ গোল গোল হয়ে
বেড়িয়ে এলো,
অনেক অনেক আমি!

কু-হক্ কথা

আগুনের কোনো শোক নেই।

চারপাশের কান্না, হতাশা, ক্ষোভ,
হাহাকার ক্রমশ: নামিয়ে ফেলছে,
আকাশ ঢেকে রাখা টুকরো কাপড়!

আগুনের কোনো শোক নেই।

কিন্তু তুমি জেনেবুঝে ভুল পড়ছো
আবহাওয়া সংবাদ অভ্যাসের বশে
আর নিজ বাগানে বাড়ছে বিক্ষোভ!

আগুনের কোনো শোক নেই।

তোমার ঝুল বারান্দায় নিজ গন্ধ
মুছে ফেলতে চাইছে, অতি যত্নের
কামিনী, এবার তুমি কাঁদলে খুব!

আর পাহাড় জুড়ে বিকট চিৎকার

আগুনের কোনো শোক নেই।
আগুনের কোনো শোক নেই।




আঁধারলিপি

বাক্ স্বাধীনতা চুরি যাচ্ছে,
শুধু মুখ দেখান, কথা বলবেন না।

শব্দের তেজষ্ক্রিয়তা বড়ো ভয়ানক,
প্লিজ, লেজে আগুন দেবেন না।

শুধু মনের ভেতর জেগে উঠুন, নি:শব্দে।

অঘুমে

বুদ্ধির চাষ তোমার
ঢের হলো,
এবার একটু
আলো দাও।

দু'এক পশলা বৃষ্টি
ঝড়ুক উঠোনে;
তুমিও তো-
দেখনি উদয়!

তোমার হাতে কত
কলকব্জা, নালিশ,
হা-ভাতে মরি
কপাল চাপড়াই!

তোমার জন্যেও
চাইছি এবার প্রভু,
এবার একটু
আলো দাও।


কু-চটি

১.
পা তেমন না হাঁটলেও, চোখ হাঁটে খুব,
পায়ের পাতায় জুড়ে দিয়ে-
নাম রেখেছি,-সর্বভূক।

২.
গায়ে তো লেগেছে হাওয়া
আরেকটু চালিয়ে ভাই
বটপাতা বড় ঝিরঝির দোলে।

৩.
দিনে কানা
রাতে কালা
জেগে সর্ষেফুল।

৪.
মনের ছানি চোখের ছানি
মাথার কিবা দোষ,
কাঁটাতারে বুক জুড়েছে-
এপাড়-ওপাড় খুশ্ ?

শনিবার, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৫

জেনারেশন গ্যাপ

আমার ঠাকুর্দা, কুড়ি মিনিটের পথ হেঁটে যেতেন 
কুড়ি টাকা বাঁচাতে 
আমার বাবা, কুড়ি মিনিটের সেপথ পেড়িয়ে যান
সাইকেল চাপিয়ে 
আমি, ওইটুকু পথ পেড়িয়ে যাই-আসি হুস্ করে
পেট্রল পুড়িয়ে 
আমার সন্তান, তারচে’ ঢের বেশি পথ পেড়িয়ে
যায় নেটে, পলকে 

তুমিও চাইছো হাতের মুঠোয় সব তুলে নিতে
অথচ, কপাল চাপরিয়ে যাচ্ছো সমানে আর 
সব হাতের বাইরে চলে গেছে বলে চিৎকার 
করে করে সংসার করে তুলেছো বিষময়;   
যদি রাগ না করো তাহলে বলি, সময়ের মূল্য
দিতেই হবে, বিদ্যুৎ নিগমের বিল যতই তোমায় 
ক্ষেপিয়ে তুলুক। জিরো একাউন্টে পড়ে থাকা 
হে প্রিয় দেশবাসী এসো উচ্চারণ করি- 

আপনার উন্নতি সমান সমান দেশের উন্নতি।

বিকলাঙ্গ মিছিল

তাদের যেতে হয়, যেতে বাধ্য করা হয়। 
তারা যায়, গড়াতে গড়াতে যায় আর 
রাজপথ ঘোত্ ঘোত্ শব্দ তোলে 
চিরচেনা ক্ষুধার্ত হা-মুখে! 

তারা এভাবে চিরকাল বড় হতে থাকে
তাদের এভাবে চিরকাল বাড়তে দেয়া হয় 
ক্রমশ: গড়িয়ে গড়িয়ে ক্ষয় পেয়ে গেলে- 
একদিন নিশ্চুপ ডেকে নেয় শশ্মানের চুল্লি! 

তাদের ছাইয়ে ভরাট অসমতল ভূমি
অসময়ে ঝরে যাওয়া উইয়ের ডানা
সন্তর্পণে টেনে নিচ্ছে, অসহায় কান্না;
নেটজেন খোঁজে, ভূকম্পের আগামী।

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৫

ফুসমন্তর

চোখ দু'টো বাবার মতো মুখটা অনেকটা মায়ের,
হাত-পা বেশ চলনসই, আহা, গোঁসাই জেনো
স্বয়ং এলেন!

নাকছাবিটা খুঁজে পেতে, বসত-ভিটে
পায়ের ধূলোয় ভরে দিলেন!

প্লিজ, ভুলবেন না প্লিজ, পা বাড়াতে
আপত:কালীন কাগজপত্তর সাথে নেবেন,
প্রবেশপথে থানাবাবুরা, দেখতে চাইবে, দেবেন।
চারদিকে যা ধূলো, কাঁদা, বালি!

ও হরি
আসছে দিন তোরই

ফোঁস করতে বারণ করেনি গোঁসাই।

বিধিসম্মত সতর্কীকরণ

চোখের ভেতর দেয়াল       তার
বুকের মাঝে বিষ             তিনি
পায়ে দেন বেড়ি
হাতে পরাণ কড়া             তিনি
কানে দেন বীজমন্ত্র           আর
মাথায় মারেন চটি!

ইনি তোমাদের প্রভু? ইনি ঈশ্বর?

তিনি সর্বঘটে জল আর     তার
পোকায় কাটে পাড়া।

আর তোমরা কিনা ভাবছো
ইনি প্রভু? ইনি ঈশ্বর?

গোপাল, বড় প্রয়োজন
ভালোরূপ উচ্চারণ করা,
বিধিসম্মত সতর্কীকরণ।

সেলফি

হাতের মাঝে হাত নিয়েছি তুলে
বুকের ভেতর জ্বললো আতস, সাঁই!

অমন সময় তুমি কেনো এলে
চিরচেনা, ভ্যাবাচ্যাকা ড্যাবড্যাব
আকাশ ভরাট শ্রাবণ!

দূর থেকে দেখো, সেলফিতে দারুণ
চুমু খাচ্ছে সবাই, চুমু চুমু চুমু
আর চিৎকার করছে-মানিক কাকু
শ্যাওলা পরা ছবি নয় আর এই
নাও আমাদের কৃষ্ণচূড়া, এই দেখো
আমাদের ভালোবাসা, আগুন!

হাতের মাঝে হাত নিয়েছি তুলে
বুকের ভেতর জ্বললো আতস, সাঁই!

স্নানঘর

কথার ভেতর জেগে উঠলো মুখ
মুখের ভিড়ে হারিয়ে গেলো কথা!

মাথার ভেতর তোলপাড়-কে
নাড়লো, খোলা দরজায় কড়া?

চৌকাঠ থেকে ফিরে গেলো কোন
সে বাঁক! কোন সে মনীষা?

আকাশে খুলে খুলে রাখা আমিকে
কে তুমি গুছিয়ে রাখো, অসময়ে?

দু'হাত জুড়ে মেখে নিলাম সাবান,
আয়না জুড়ে কেবল সাদা, শূণ্যতা।

বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৫

দূর হতে এসো কাছে

দারুণ উজ্জ্বল একটি টি-শার্ট
জেনো উড়তে উড়তে এলো
তুমি তাকে জড়িয়ে ধরলে
চুমু খেলে আরো আরো আরো।

উজার করে উঠে এলো সিঁদূর
সম্ভবা, তার হাতে তখন
নড়ছে, তাজা রক্তে ভরা
একটি লাল পাউচ, ভীষণ!

পরে থাকা কিছু চুল, নখ,
জলছাপ, আর্তি টুকটুক করে
তুলে নিলো কেউ আর হাত
মুছে নিলো নিদারুণ আকাশে!

রোদ থেকে নামিয়ে আজ সে
জামা গায়ে দিলো একজন
আর কি চিৎকার চারপাশে-
'নো হার্ট, নো পেইন'
'নো হার্ট, নো পেইন'...


বিসমিল্লায় গলদ

মহাশয়, অতি সাধু
তুমি গুড়, আমি ছাতু?

উনি ফলিত অঙ্কে চোস্ত
বিরোধীরা নির্বিষ
সভা সব ফিস্ ফিস্
জ্বর সারে কি দোস্ত?

ক্ষুধার পেট বচনে কি ভরে
বাজার কি রক্ষা করে ঘরাণা?

ভোটবাক্সে চুরি গেল স্বাধীনতা
সমূহ বিপদ-
তুমি গেলে বেঁকে, আমি সিধা
অক্ষর জ্ঞান কি তবে সাক্ষরতা?

আমাদের জন্য ভোটার কার্ড
আমাদের জন্য আঁধার
আমাদের জন্য আরটি এ্যাক্ট
আমাদের জন্য রেগা
আমাদের জন্য কত কত জেল
আমাদের সবেতে পাশ ফেল?

মহাশয় অতি সাধু
ইনি কালসাপ ইনি কেতু
ইনি রাহু ইনি শুক্রপতি
পাগলা গারদের ইনি ভূপতি।

তমসা

শূণ্য দু'হাতে উঠেছে যা কিছু
তুমি তার নাম দিলে-
'সম্ভব' আর
কি অসম্ভব তৎপরতা
একটি ভোরের জন্য!

সাত সকাল থেকে
গলা শুকিয়ে কাঠ অথচ,
একবিন্দু ছুঁয়ে দেখিনি
বরং
ডাকপিওনের বাড়ানো হাত ও
তাতে ধরে রাখা প্রাণবায়ু
দেখে-ভয়ানক আঁৎকে উঠি।

একে তুমি যাই বলো আজ এটুকুই
তোমাকে লিখলাম।

শবযাত্রা

ধূর্ততাহীন নদীর কাছে
যেতে
চেয়েছিল বালক
নদীটি চড়ায় আটকে যাবে
জেনেও

অথচ, কি কান্ড-
বালিকারা নদী হতে চেয়ে
ঝাঁপালো কি অসম্ভব
তৎপরতায়
আর স্হলভাগ গেল কমে...

বিষয় মরীচিকা

যতক্ষণ না তোমার সামনে
তারচে' ঢের বেশী স্হির
নতজানুু
সাদা ক্যানভাসটির উপর;
যার কেন্দ্রবিন্দু ছিলে-তুমি
যার গায়ে নি:শব্দে ফুটছিল
অক্ষর এবং
নিচ্ছিল শব্দরূপ আর আমি
আমার ভেতর-
ফুঁসছিল, একটি বুনো-মোষ।

পোড়া মানচিত্র

মাথায় আসে হাত অবধি আসে না

আয়ারাম – গয়ারাম আর বন্ধ দরজার গল্প
এখনও ভারি করে রেখেছে বাতাস!
ছানি কাটা দোকানে জমিয়ে তুলেছে ভিড়!
বিছানা, মেঝে, পাপোষ...সব একাকার করেছে
বুড়ো ভামের দল আর তাদের মাথার ভেতর
জমে ওঠা ঘাম! নেটজেন বলে -চিৎকার জুড়ে
দেয়া সারমেয় সকল জানে না, কতটা জরুরী 
একা, নি:সঙ্গ, স্বেচ্ছা-নির্বাসন!

মাথায় আসে হাত অবধি আসে না

মেধার বাতানুকুল জানালা, অদৃশ্যায়িত ঘুঙুর
জানে,
রক্তকাদা মাখা ঘাসে কেনো উল্টে রয়েছে,
আমাদের,
অলিখিত সাদা পাতা

মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০১৫

জ্যাম লাগার আগে

কত ডাকি বুকে আয় বুকে আয়, একটাও চাপা দিলো না। শারিরীক কসরৎ
দেখিয়ে কি সুন্দর চলে গেল পাশ কাটিয়ে ! লোকেরা কি সুন্দর সংঘর্ষ
এড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তোলে

রাইসিনা হিলের ঘোড়াগুলি আজ অচমকা গলা সাধলো। ভরদুপুরে।
রাস্তার হোর্ডিং থেকে চোখ টিপে দিলো সাবান সুন্দরী। জ্যাম লাগার আগেই
ট্রাফিককে দেয়া হলো নিমোনিয়া, ব্রঙ্কাইটিস- প্রথম সংস্করণ।
মোড়ে মোড়ে নেতাজী স্ট্যাচু হয়ে দিকনির্দেশ করছে।


ডুবে মরার আগে

মুনমুন 
আমার পাশের বাড়ীর জানালার 
নাম।
একটুকু মমতা নেই গো।
তাকে দেখে জানালার পর্দায়
লিখে রাখি, মমতা।

অই থেকে উচ্চনিনাদ,
শ্রী শ্রী সারদা পদে, দুটি জবা 

রাখি,
রোজ রাতে, এবার বিদেয় দে মা।

ভাল থেকো, বেঁচে থাকা।
শ্বাস।
ভাল থেকো । ভালবেসো নিজেকে ,
প্রশ্বাস হয়ে আমার।

ভূমিপুত্র

সজোরে আছরে পড়ছে
তীব্রতায় ফেটে যাচ্ছে
ঢেউ,
পেছনে অগুন্তি ঢেউয়ের
গর্জন
আমাদের পায়ের কাছে।

শরীরে অখন মহাকাল
আমাদের।

ভূমিপুত্র / ২

হৃদয়ের পুরসভা দু'হাতে সাফ
করতে করতে আচমকা গেয়ে উঠলে
জাতীয় সঙ্গীত, ঘুমের ভেতর
ভয়ানক আহ্লাদে চুমু খেতে পারে-
যাদের আদিপুরুষ উদ্বাস্তু, পৃথিবীতে।

অথবা,
যাদের ঠোঁটের উপর সরের মতো
জমে থাকে- আত্মার চিৎকার।

সখি জানালায়

সেখানে এমন হওয়ার কারণ সত্যি সত্যি ঠাসা।
কিন্তু এখানে যা হওয়ার নয় তাও তো হলো;-
যেমন তুমি যা তৈরি করো- মুনাফা তার ধারেকাছে;
আমি যা তৈরি করি- তা অবশ্যই ব্যর্থতা।

অথচ,
দু'জনই প্রত্যাশা করি, দারুণ একটা ভোর।

শশীকথা

কত শব্দ বস্তুর রূপ নিলো
কত বস্ত ভেঙে টুকরো টুকরো
আর শব্দ...

যখন তখন শরৎ কামনা-
ভুলেছ বাকী থাকা পাঁচটি ঋতু!

এসো যামিনী
আমি ঋতুমতী।

দিদিমনি

শুন্য নিরাপদ সংখ্যা নয় জেনেও তোমার
দিকে তাকালাম, আর তোমার ভেতরে-
বাইরে বাড়তে থাকলো, হরেক সংখ্যা, ক্রমাগত
কষতে থাকলো ভুল অঙ্ক

'প্রজাপতি খুন না করে ঝড়ের পোষাক জীবনকে
কিভাবে পড়ানো যায়' তোমার এ উদ্ভাবনী
শোনার আগ্রহে যেই তাকালাম...

এরপর আর ধারাপাত !

একান্তে

বিষণ্ণতা, আমার প্রেমিকার নাম।

সে আছে বলেই , 
আলো অপেক্ষা করে, তোমার গর্ভে।

আলোকমালা

জেগে থেকো, গলে যেওনা
হে নিশি- হে আঁধার 

তোমার বিপুল বুকে-
উৎস্ হয়ে জাগি ।

সকলই তোমার দান

তুমি তাকে চেনো না, জানো না
তার ভাষা অথচ, তাকে যেতে
হয়, তোমারই ইশকুলে!

সে বোঝে না তোমার কথা হা-
করে তাকিয়ে থাকে আর তুমি
চিৎকার করো। গলার শিরা ফুলে ওঠে!

তুমি শেকলে জড়াও আর বেদম দাও
মার, আকাশ জুড়ে অব্যক্ত কান্না,
রক্তাক্ত বুকে তোমার পা চেপে বসে।

অথচ,
তুমিও একদিন তার মতো ছিলে
তুমিও ডুকরে কাঁদতে, রক্তাক্ত হতো
বুক; আজ তাকে ছুঁতেও পার না।

তুমি বড় হতে চাইলে যে ভীষণ...

একটি কালো তিল ও শূণ্যতা

রাত দশটার পর ছাদে আসে। গান গায়। আকাশের দিকে 
মুখ করে, অন্ধকারে। পড়শী বাড়ির কেউ একজন। সে
সুরের জাদুতে সম্মোহিত, সে সময়, চারপাশ । অদ্ভুত এক
আর্তি, তন্ময়তা, সে কন্ঠে। আমাদের কপালের বিকট সব
ভাঁজ মুছে, ফুঁটে উঠে প্রশান্তি। আকাশ নেমে আসে নিঃশব্দে।
আর রাত ঘুমিয়ে পরে গভীর থেকে গভীরে।

ভোরের কাগজ আর চা দিতে এসে গিন্নী বললো, শোনো –
পাড়ায় অঘটন ঘটেছে। গতরাতে, ছাদ থেকে পরে মারা
গেছেন, পাশের বাড়ির কাকীমা। রাতে ইনিই গান গাইতেন
ছাদে। এই দেখো, ছবিসহ খবর বেরিয়েছে, কাগজে।

মূহুর্তে ফাঁকা হয়ে গেল মাথার ভেতর! রঙীন ছবিতে
একটি কালো তিল তখনো চক্ চক্ করছে কাকীমার
চিবুকে! মায়ের মুখ মনে পড়ে গেলো ।ঝাপসা হয়ে এলো
সব। বিশাল এক শূণ্যতা, বুকের ভেতর ডুকরে উঠলো -

যে গানে সম্মোহিত হয়ে পড়তো চারপাশ
যে গানে আকাশ নেমে আসতো কাছে
যে গানে মুছে যেতো কপালের বিকট সব ভাঁজ
যে গানে ফুঁটে উঠতো দিনান্তে প্রশান্তি

সে তুমি আর নাই ! সে তুমি...

ভাঙা আয়নায়

দেখা হলো। কথা হলো। ভাব হলো।
বিনিময় হলো, কয়েক পাতা চিঠি।

সবিনয় লেখা হলো, দাবী রেখো না।
বৃষ্টি আর ধূলোতে ভয়ানক এলার্জি,
জানালা জুড়ে থাক, কুশল বার্তা।

ভালো থেকো, আকাশের অধিক।
শেষপর্যন্ত, তোমার হাসি তোমারই।

একটি অশান্ত স্মৃতি ফলকের হিস্ হিস্

শীত শীত ঘরে জমা রেখে বিষ দাঁত, সব বিষথলি 
ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে, সমস্ত ফসলের ক্ষেতে, একথা-
চক্ষুবিশারদ জানে। বিদ্যুৎ নিগম জানে- নেচে উঠা
পা, কোমড়ের দুলুনি, কাঁপানো নিতম্ব, চোখ-হাত
খুলে নেয়া বুকের গভীর খাদ ইত্যাদি সবই তার
নিয়ন্ত্রিত। এমনকি চিৎ হয়ে পরাটুকুও।

তোমাদের বেদনাও জানে সেকথা। তারপরও কেন
খোঁজ অসময়ে প্রেমের গান, প্রেমের কবিতা? কেন
অপেক্ষা করো, পথে যেতে ফিরে তাকানোর? কেন
কান্নাকাটি জুড়ো, পথে পথে পথ হারানোর ব্যাথা?

বেড়জাল কাটতে চাওয়া আহম্মক, তোমাদের উস্কে
দিচ্ছে যা কিছু একা একা, তা সেই পুরনো হা-মুখ;
শেকড়ের গোপনে রাখা শ্বাস ফনায় তুলে নিও ভূমির
পুত্র-কন্যা সকলে, উত্তর-পূর্ব জুড়ে মেঘ জমেছে খুব।

সম্মিলীত পদধ্বনি একদিন ঠিক গ্রীষ্ম ডেকে আনবে
এ পাহাড়ে। খুমপুঁই ফুল হাতে হাতে তুলে দিয়ে-
হে নূতন, সেদিন পাহাড় গাইবে প্রেমের গান,
পাঠ করবে প্রেমের কবিতা, সেদিনই যা লেখা হবে।

সহজীয়া তোকে

আমাদের কোনো রবিবার নেই।
বিশুদ্ধবাদী ও সরকার অপহরণ করে
নিয়ে গেছে তারে।

আমাদের কোনো রবিবার নেই।
আমাদের সবেতে ঠুসে আছে রাহু-কেতু।
বুধ, শুক্র প্রতারকের তর্জনীতে উজ্জ্বল।

আমাদের কোনো রবিবার নেই।
আমাদের চিকন চিকন লেগ কামড়ে
ছিটকিনি এঁটে আইটেম দেখে ভন্ড।

আমাদের কোনো রবিবার নেই।
বিশুদ্ধবাদী ও সরকার অপহরণ করে
নিয়ে গেছে তারে।

এভাবে চলে যায় কেউ

(সংগীতশিল্পী কাবেরী-কে উৎসর্গকৃত )

তারসাথে কথা হলো, সব মিলিয়ে
সাড়ে সাত মিনিট;
কিন্তু, হঠাৎ করে তার চলে যাওয়া -
ঝুপ্ করে থামিয়ে দিল, মাথার
ভেতর চলমান সব হিজিবিজি!

অই সাড়ে সাত মিনিট
কি কথা হয়েছিলো,
কি শুনেছিলাম মনে নেই।
দেখা হয়েছিলো।

আজও দেখতে পেলাম -
গান সেরে মঞ্চ থেকে নেমে এলো,
একটি শিশুর হাত নিলো হাতে
তারপর হাঁটতে শুরু করলো হাঁটতে

অই হেঁটে যাওয়া অই
হাঁটতে থাকা দূর থেকে সেদিন
খুব আলো ছড়াচ্ছিলো

শিশুটি তোমার পায়ের সাথে
বেশ মিলিয়েছিলো পা।

ওইটুকু দেখা আজ অনেক
দীর্ঘ হয়ে গেল;
ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে চোখ, কাবেরী,
তোমার হেঁটে যাওয়া পদচ্ছাপে...

হে ছলনা হে প্রেম

১.
তার কোনো সভা
সমিতি মিছিল নেই,
আপাত শান্ত ।
মায়াময় ।
নাম ধরে ডাকলে-
ঘরময় ছড়িয়ে পরে
ছিঁড়ে যাওয়া নূপুর !

২.
এসো
জানালায়
বৃষ্টি কি ছমছম
করে পথ চলছে!

পাশবালিশে
মন ভরে না
দু'হাত চাপি
ভিজিয়ে ফেলা চোখে!

একটি জলছবি

তোমার মায়াময় মুখে 
এতো বিষাদ কেনো?

সংসার পেতেছে বুঝি -
ফাঁদ ভালবাসার ঘরে?

তোমার উঠোনে কেনো
এতো বিচুটি পাতা?

ঝাঁট দাও না বুঝি -
নিয়মিত সকাল-সন্ধ্যা?

তোমার চোখ কেনো
এতো টলটলে পুকুর?

ছিপ্ ফেলো, তোলো
কি, পায়ের নূপুর?

হে প্রেম হে প্রভু

ডুবে গেলো
তলিয়ে গেলো আরো
একটি দুপুর!

দূরত্ব এড়িয়ে

তার হেঁটে যাওয়া দেখে
মুগ্ধ,
তার কথা শুনে শিহরিত
মানুষের
মুখ, পুরনো কলের গান হয়ে
বাজে!

চমক ভেঙে গেলে জড়ো হয়
ভীতি।

শুকনো বন্দর, মজে যাওয়া নদীদের
নিয়ে কোলাহল আজও - জনপদে;
অথচ,
কেউ কাটেনি, একাকী সাঁতার!

ঘাই

A work of art dealing with night


ডায়না পামারের সাথে প্রায় রাতে ছুটে বেড়ানো গাঢ় অন্ধকারেজ্যোৎস্নায়বনে-জঙ্গলেসোনালি সৈকতেপিরন্ হা মাছেদের শরীর ঘেঁষে। আমি আর ডায়না। পিগমীদের সাথেবুড়ো মজরেক্সতুফান আর অন্যান্য সকলের সাথে কেটেছে কিছু মুহূর্ত কখনো-সখনো পূর্বজদের-ঘষা মুখ চেনার কৌতূহলেবেতাল-গুহায় অফুরন্ত মোমবাতিটির সামনে। মোমবাতিটিকতযুগ ধরে জ্বলতে জ্বলতে অর্ধেক হয়েছে বা প্রথম থেকেই অর্ধেক ছিলো কিনা– জানা নেই। শুধু জানিআমি আর ডায়না যখন থেকে তাকে দেখছি – সে অইরকমই। আদিম আলো

সেই থেকে অফুরন্তসাই-সাই বাতাসের ভেতর,জলে-স্থলে ওড়াউড়িঘোরা আর ঘোরা আর ফ্ল্যাশ গর্ডনটিনটিনলোথারম্যানড্র্যাকের যাদুছড়ি ঢের ছিল জীবন্ত। স্বপন কুমারের কালনাগিনীকে ফাইভ স্টার ছুঁড়ে দিয়ে তৎপরতাহীন ডায়নাকে নিয়ে ওঠে যেতাম গাছবাড়িতে। সেখানেএক দারুণ মুহূর্তেশরীরে লেগে থাকা- বেলাভূমির সোনালি বালিআমাকে চিহ্নিত করেছিল – ভূমিপুত্র। এরপরআমি আর কোথাও যেতে পারি না। থাকতে পারি না। যতদূরে যাই- যেখানেই যাই- এক অবোধ ধ্বনি আমায় টেনে আনে – ভূমিতে। অথচএখানে দাঁড়াতে পারি না। অই থেকে প্রচণ্ড এক জ্বরে আক্রান্তবুঝতে পারিনি লোথার কখন আমার শুক্রপতিতে স্থান নিয়েছে

একটা সময় গাছবাড়ি থেকে আমার বিভৎস সুন্দর অবতরণ। কাঁটাঝোপ আর ঘাস আর কীট-ফড়িঙের মাঝে। তারপর সুতো আর সেতুসেতু আর সুতোতে জড়িয়ে পরা। ততক্ষণেচুলের ভেতর আটকে থাকা বেলাভূমির সোনালি বালি ঝরে গেছে। উৎপাটিত হয়েছে – গাছবাড়ি। যেখানে,ডায়না ছিল। আমি এগলি-ওগলি এপাড়া ওপাড়া ঘুরে ঘুরে একদিন রাজপথে এসেও তাকে পাই নি

শুধু বাতাসের ভেতর তার ডাক শুনতে পাই। অবিরাম। আর ছুটতে ছুটতে ছুটতে ছুটতে তড়িৎ কণাবাহীর মতো কোথা থেকে কোথায় ঢুকে পড়ছি- বেড়িয়ে যাচ্ছি। ছুটে বেড়াচ্ছি। বাতাসে তার কণ্ঠস্বর। মাথা চুইয়ে পরা ঘামে নোনাগন্ধ, - নাকে লাগতেই প্রবল এক চঞ্চলতা আমাকে আরো বেশি করে তাড়িয়ে বেড়ায়। যেদিকে তাকাই তার কুয়াশা মাখানো মুখমাঠের ওপাশের ভোরের লাল বলটির মতো কখনো স্পষ্ট হয়ে হারিয়ে যায়মুহূর্তে। আর প্রচণ্ড আক্রোশে খালি করিকপালের উপর থেকে গুচ্ছ গুচ্ছ চুল। এবং এভাবে নিজেকে পান করতে করতে নি:শেষ করা হলো না আমার। লোথারএকমাত্র লোথার আমার শীর্ণ হাতের তালুতে ভয়ানক উঁচু হয়ে আছে – এখনও

ক্রমশ: কি অদ্ভুত মাটিতে আটকে যাচ্ছে পা ! এতো তাপএতো উষ্ণতা বাতাসের ভেতর ! শিবিরে শিবিরে এতো মানুষ ! কোথা যায় এরা ! কোথা থেকে ফেরে ! কে গেল সকালে আর কে ফিরে এলো সন্ধ্যেতে এবং বেড়িয়ে গেল পুনরায় ! ইত্যাদি সব আরো বেশি সুতো আর সেতুতে জড়িয়ে ফেলে। আর হ্যাঙারে ঝোলানো আমার ধুলোমাখা-শরীরের জলে চোবানো জামাখানি- বহন করেআমার সারা সপ্তাহ-মাস-প্রতিদিনের মত্ততাশ্রম

শহুরেপনার নাটুকে সসঁকিতির সাথে যার বিনিময় করা সম্ভব নয়- আর। অথচডায়নাএক ত্রিসন্ধ্যায় কাউকে আমি আঙুল থেকে খুলে দিয়েছিলামখুলি আংটি। আর অই নারী তাতে চুমু খেয়ে ছুঁড়ে দিলো এক কূয়োতে- সাকুল্যে যার আয়তন ১০৪৯৯ বর্গ কি.মি.
সেই থেকে বেতাল চূড়ায় বাজছে – নাবাল ড্রাম। দ্রিম্ দ্রিম্ দ্রিম.......। ডায়না কি সেখানে ? ডায়না !


কে চলে গেল বুকের মাঝ দিয়ে ?
গুলি ? শ্রম ? না স্বাধীনতা?

এক ফুটপাতবাসীর মৃত্যুতে

ভোরের মতো স্নিগ্ধসূর্যাস্তের
মতো অসহায় দুটি চোখের
ভেতর গলে গেলো, তপ্ত দুপুর,
ঝিম্ মেরে যাওয়া এক সন্ধ্যা! 

রাত কেবল কেঁপে কেঁপে
ওঠা দোলনের কাঁটা আর
উল্লাস উল্লাস বলে একা
ঘুমিয়ে পড়া অভুক্ত কান্না 

মাঝরাতে উছলে পরা আলো
রাজপথে জুড়ে দেয় চিৎকার –
হে মুখ্যমন্ত্রী, আমাদের দীর্ঘ
দীর্ঘশ্বাস তোমায় দীর্ঘজীবী
করুক।

শেষ ইচ্ছে

অনেক কিছু দেখা হলো, 
দেখা হলো না এখনও
স্বাধীনতার ক্রোমোজম।

বড় সাধ জাগিল
অথচ, তাহার ঘুম ভাঙিলো না ।

ফটোসেশান

১.
কার কী বলার আছে?
তোমাদের যাবতীয় দু:খকথা,
গল্পমালাতোমাদের যাবতীয় সব
বলে রাখআকাশের কাছে।

২.
বহি:রাজ্য বিদ্যুৎ দিলেতোলা হবে
অনালোকিত মুখ।

৩.
মেঘের ভেতর বসেছে সভা
বিকোচ্ছে বৈশাখী নির্ভর শব্দ
আমরা কি ভীষণ জব্দ?

৪.
গৃহকর্তা তরমুজ খাচ্ছেনটেলিফোনে ।

ও হরি তোকে

রান্না হচ্ছে বুকে
আগুন দিচ্ছে চোখ
মাথায় ফুঁটছে হাঁড়ি

ও হরি
জ্বলছে দারুণ
কান্না বাঁশি
দু’হাত তুলে

আর সয় না
আর সয় না

ও হরি
ডোরবেলে, কি ভীষণ
ঝড় বৃষ্টি বিদ্যুৎ
কানফাটানো শব্দ

ও হরি
রিনরিনে ঘন্টাধ্বনি
ভক্তিগীতি, স্তোত্র
এখনো তোর গয়না !

আর সয় না
আর সয় না

ও হরি
আকাশ ভাঙা বৃষ্টিতে,
পা ডোবালি? কেন?

তোর ও রান্না হয় বুকে
তোর ও মাথায় ফুটে হাঁড়ি
তোর ও আগুন দেয় চোখ

ও হরি
জ্যোৎস্না মাখা পা দু’খানা
কোথায় রাখি?

রান্না হচ্ছে বুকে
মাথায় ফুঁটছে হাঁড়ি
আগুন দিচ্ছে চোখ

টিয়া কাহিনী

সিনেমা ছাড়া কোথাও কি শিস্ দিতে শুনিনি!
এখনও কোথাও কি তুই শিস্ দিতে শুনিস?
কানে ব্যথা হলে, টিয়া তোকে খুব মনে পড়ে
সত্যি বলছি, অই একবারই ট্রাই করেছিলাম
পুলিশ কাকু যে তোর বর তা কেন বলিসনি!

ধিংকা চিকা ধিংকা চিকা করে পাড়া মাতালি
ব্রহ্মাণ্ড কেঁপে কেঁপে উঠলো রাত বিরেতে সই
সত্যি বলছি, অই একবারই ট্রাই করেছিলাম,
পুলিশ কাকু যে তোর বর তা কেন বলিসনি!

বাবারা কেন চিরকাল কান ধরে ধরে টানে!
পথের ভেতর পথ খুঁড়ে যায় কোন সে বলদ!
সত্যি বলছি, অই একবারই ট্রাই করেছিলাম,
পুলিশ কাকু যে তোর বর তা কেন বলিসনি?


জঙ্গলে, অচেনা স্টেশনে নেমে যাস হুট্ করে?
গোপন চিঠি পেতে এখনো করিস ছটফট?
পায়ের পাতায় এখনো কি লেগে আছে ঝড়?

পুলিশ কাকু যে তোর বর তা কেন বলিসনি!
কানে ব্যথা হলে, টিয়া তোকে খুব মনে পড়ে।